কারিগরি, মাদ্রাসাসহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য আরও তিন-চার মাস সংসদ টিভিতে ক্লাস সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। টিভি অনেকের নাগালের বাইরে, ক্লাসগুলো নিয়ে অতৃপ্তি আছে। তবু করোনাবন্ধ বাড়লে শিক্ষা সচল রাখার এটাই বড় উপায়। এমনিতেই সিলেবাস শেষ করা কঠিন। পরীক্ষাও থমকে আছে।
শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অনেকে এই ক্লাসগুলোকে দেখছেন মন্দের ভালো হিসেবে।
শিক্ষা প্রশাসন ২৯ মার্চ থেকে মূলধারার মাধ্যমিক এবং ৭ এপ্রিল থেকে প্রাথমিক স্তরের সব বিষয়ে ক্লাস রেকর্ড করে সংসদ টিভিতে দেখানো শুরু করেছিল। এখন আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষা যুক্ত হয়েছে। আলিয়া ধারার মাদ্রাসার ক্লাস যুক্ত হতে যাচ্ছে। দেশে এখন প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় পৌনে দুই কোটি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ১ কোটি ৩৪ লাখের মতো শিক্ষার্থী আছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (প্রশিক্ষণ) প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের দিয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৫০০টি ক্লাস রেকর্ড করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সেগুলোর ২০০-এর বেশি প্রচারিত হয়েছে। আর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসি উল্লাহ বলেন, এ পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ের ক্লাস হয়েছে এক শর মতো।
প্রাথমিকের ক্লাস হয় সকাল ৯: ০০ থেকে ১০: ৪০ পর্যন্ত। এরপর থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত চলে মাধ্যমিকের ক্লাস। এখন ক্লাস বাড়বে। তবে মাউশির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, টিভি দেখার সুযোগ না থাকায় ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী এই ক্লাসগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। টিভি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তিবিষয়ক সরকারের এটুআই প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে তাঁরা এ ধারণা পেয়েছেন।
করোনাবন্ধে টিভির ক্লাসগুলো 'মন্দের ভালো'। ফোনে পাঠদানের ব্যবস্থাও হচ্ছে। স্কুল খুললে সিলেবাস কাটছাঁট করে পরীক্ষা হতে পারে।
ক্লাসগুলো নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ আছে। উষ্ণীষ সিংহ মোড়ল রাজধানীর উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সে নিয়মিত টিভির ক্লাসগুলো দেখে এবং নোট নেয়। প্রথম আলোকে সে বলেছে, কিছু ক্লাস তার খুব ভালো লাগে। কিন্তু কিছু ক্লাস বুঝতে পারে না। কখনো কখনো পরিষ্কার শোনা যায় না। তখন বিরক্ত লাগে।
টিভিতে শিক্ষকেরা ক্লাস শেষে বাড়ির কাজ দেন। শিক্ষার্থীকে প্রতিটি বিষয়ের খাতায় তারিখ দিয়ে সেগুলো করতে বলা হয়েছে। স্কুল খুললে এই খাতাগুলো তারা শ্রেণিশিক্ষকদের জমা দেবে। শিক্ষকেরা নম্বর দেবেন, সেটা ধারাবাহিক মূল্যায়নের অংশ হবে।
এসব ক্লাসে শিক্ষকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা যায় না। মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, অভিযোগগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে। স্কুল পর্যায়ে সারা দেশে অনলাইনে ক্লাস করানোর সুযোগ এখনো নেই—এই ক্লাসগুলোই সহায়।
ঢাকার কিছু নামী স্কুল নিজেদের মতো করে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে। মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বললেন, তাঁরা ফেসবুকে গ্রুপ খুলে চতুর্থ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাচ্ছেন। প্রশ্নোত্তরের সুযোগ থাকছে। প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাসের পড়ার কাগজ ও বাড়ির কাজ দেওয়া হয়েছে, টিভির ক্লাস দেখতে বলা হয়েছে।
অনলাইনে ক্লাসের বিষয়টি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও এলোমেলো আছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে এটা শুরুর তাগিদ দিয়েছে, তবে শিক্ষকেরা বলেছেন আগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা দরকার। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, কিন্তু এখনো দিকনির্দেশনা দেয়নি।
স্কুল পর্যায়ে পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষা প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সামনে মাধ্যমিকের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষাও আটকে যেতে পারে। মাউশি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও ঢাকা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে বলেছেন, স্কুল খুললে সিলেবাস কাটছাঁট করে কিছু পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।
Upcoming Event
Academic Class Level
Institute Facilities
-------------------------
Special Attention for Every Students
A dynamic learning community recognized as one of the leading schools in Bangladesh, offering a good educational environment, safety and security of the students.
Study Tour