করোনার প্রকোপে এক রকম স্থবির হয়ে আছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই ধাক্কা সামলে উঠতে কী করণীয়? লিখেছেন তিনজন শিক্ষক।
করোনা-পরবর্তী শিক্ষাভাবনা : মোহাম্মদ কায়কোবাদ
শিক্ষাবিদ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
করোনা-পরবর্তী সময়ে আমাদের পৃথিবী, সমাজ আর আগের মতো হবে না। এখন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, কিন্তু ন্যানোমিটার দৈর্ঘ্যের করোনাভাইরাস আমাদের ঠিকই পরীক্ষা নিচ্ছে। পরীক্ষার বিষয় মানবিক গুণাবলি। এই পরীক্ষায় অনেক সমৃদ্ধ, সম্পদশালী দেশ পাস মার্ক পায়নি। কাজেই এই বৈশ্বিক সমস্যা সফলভাবে মোকাবিলা করতে আমাদের মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ হতে হবে, কাজ করতে হবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে।
আমরা নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছি। মধ্যম কিংবা উচ্চ আয়ের দেশ হতে হলে আমাদের জাপান, কোরিয়া, তাইওয়ানের মতো দক্ষ হতে হবে। এই দক্ষতা অর্জনের চাবিকাঠি হলো শিক্ষা।
তাই শিক্ষায় আমাদের জোর দিতেই হবে। আমাদের ছাত্রসংখ্যা অনেক বেশি; পৃথিবীর ২০০টি দেশের জনসংখ্যা আমাদের ছাত্রসংখ্যার থেকে কম। বিশ্বায়নের যুগে দেশে যোগ্য কর্মী না থাকলে বিদেশিরা আমাদের দেশের কাজ নিয়ে যাবে এবং এখন নিচ্ছেও। পত্রিকা মারফত জানা গেল, প্রতিবছর বিদেশি বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শকদের ফি বাবদ ৩৫ হাজার কোটি টাকা আমরা বিদেশে চলে যেতে দিচ্ছি। এই টাকায় মাসিক ২০ হাজার টাকা বেতনে ১৫ লাখ বেকারের কর্মসংস্থান করা যায়। আমাদের নিশ্চয়ই জ্ঞান-দক্ষতার অভাব রয়েছে, যার ফলে দেশের সব বড় প্রকল্পেই বিদেশি বিশেষজ্ঞের উপস্থিতি। দেশে অনেক মানুষ, কিন্তু যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষের বড় অভাব। তাই নিজের দেশের কাজ নিজেদের আয়ত্তে রাখার জন্য আমাদের বিশ্বমানের শিক্ষা চাই। তবে বিশ্বমানের শিক্ষার জন্য হঠাৎ করে তো আমরা যথেষ্ট পরিমাণে যোগ্য-অভিজ্ঞ শিক্ষক পাব না। আমরা যদি প্রযুক্তি ব্যবহার করি, তাহলে সমস্যাটি অনেকাংশে সমাধান করা সম্ভব। সরকার এখন টিভির মাধ্যমে এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন এ কথা বলে আসছি, সময়সূচি করে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষকদের দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের পাঠদান করানো সম্ভব। লকডাউনের ফলে আমাদের শিশু, কিশোর, তরুণেরা মাসের পর মাস পড়ালেখা ছাড়া থাকতে পারে না। এটি মানসিক বিকাশের জন্য অনুকূল নয়। এদের গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অভিজ্ঞ শিক্ষক দিয়ে পাঠ্য বিষয়ের উপস্থাপনা তৈরি করে বছর ধরে পরিবেশন করা যেতে পারে। উপস্থাপনা তৈরির জন্যও পর্যাপ্ত সময় দেওয়া প্রয়োজন, যাতে তা ২০ থেকে ২৫ লাখ ছাত্রের মনোযোগ ধরে রাখতে পারে, তাদের মধ্যে জ্ঞানপিপাসা জাগাতে পারে এবং পাঠ থেকে যেন তারা আনন্দ পেতে পারে।
করোনার মতো মহামারি সমস্যায় যখন স্কুল-কলেজে উপস্থিত হওয়া নিরাপদ নয়, তখন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষার এই ধারাকে অব্যাহত রাখাই বড় সমাধান। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা যে অনলাইনে কার্যকরভাবে দেওয়া যায়, তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত। এই পদ্ধতি আরও কার্যকর করার জন্য দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় যে কারণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তা সমাধান করতে হবে। এই দুঃসময়ে শিক্ষাব্যবস্থার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা জরুরি। উন্নত বিশ্বে দূরশিক্ষণ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদেরও এই পথ অনুসরণ করতে হবে।
আমাদের তরুণ-কিশোরদের বুঝতে হবে যে জীবন গড়ার বেলায় পরিবার, সমাজ, দেশ ও সরকার কেবল পরিবেশ তৈরি করে দেবে। তাই করোনার দিনগুলোকে কাজে লাগাও। যে বিষয়গুলো শ্রেণিকক্ষে রপ্ত করা সম্ভব হয়নি, এখন তা শিখে নাও। অখণ্ড অবসরে পছন্দের বিষয়গুলো আত্মস্থ করে নিজেকে সমৃদ্ধ করো। জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করে শুধু নিজের জীবন গড়াই নয়, দেশ-সমাজের অগ্রগতিতেও অবদান রাখো।
উচ্চশিক্ষাতেও পড়বে বড় প্রভাব : রাগিব হাসান
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা অ্যাট বার্মিংহামের সহযোগী অধ্যাপক
অদৃশ্য এক শত্রুর হাতে জিম্মি আজ সারা বিশ্ব। খুদে এই করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে বিশ্বের সব দেশ আর সব মানুষ লকডাউনে আটকা পড়ে আছে। সারা পৃথিবীর শিক্ষাব্যবস্থাই একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে।
স্থানীয় শিক্ষার্থীরা না হয় বাড়ি চলে যেতে পেরেছেন, কিন্তু আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা? তাঁরা পড়েছেন দুরবস্থায়। যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যে এখন লকডাউন চলছে। বিদেশি শিক্ষার্থীরা পরিবার–পরিজনবিহীনভাবে আটকে আছেন ঘরে। আবার যাঁদের পড়ার ফান্ডিং বা বৃত্তি নেই, তাঁরা খণ্ডকালীন কাজ করে পড়ার ও থাকার খরচ চালান। কিন্তু করোনাভাইরাসের লকডাউনে সেই কাজ হারিয়ে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক চাপে পড়েছেন তাঁরা। অস্ট্রেলিয়ায় যেসব বিদেশি শিক্ষার্থীর খরচ চালানোর সামর্থ্য নেই, তাঁদের বলা হয়েছে নিজের দেশে ফেরত চলে যেতে। যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপে কর্মক্ষেত্রে ঢোকার পরিকল্পনা করছিলেন, তাঁদের অনেকেই কোনো চাকরি পাননি। কয়েক মাস আগেও যা ছিল অবিশ্বাস্য।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বার্ষিক বাজেটে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। এর প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থীদের ওপরও।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা পিএইচডি বা স্নাতকোত্তর করছেন, গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ বা ফেলোশিপ যদি কারও থাকে, তাহলে সেটা আপাতত সুরক্ষিত। কিন্তু সরকারের দূরবস্থা যখন হয়, তখন তার প্রভাব গবেষণা খাতের বরাদ্দের ওপরও পড়ে। কাজেই আগামী দুই বছর নন-মেডিকেল খাতে রিসার্চ গ্র্যান্টের তহবিল কম আসবে আন্দাজ করা যায়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই আগামী কয়েক বছর তহবিলের ঘাটতি থাকায় পিএইচডি বা স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ কমে যাবে অনেকাংশে।
আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি শেষ করে বেরোচ্ছেন, তাঁদের জন্য কাজের সুযোগও কমবে। গত দুই মাসে সব কোম্পানির অবস্থার বারোটা বেজেছে, তাই চাকরির সংখ্যা কমবে। ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে ১০ শতাংশ মানুষ বেকার হয়ে গেছে, বেকারের সংখ্যাটা আরও বাড়ছে প্রতিদিন। একাডেমিক কার্যক্রমে নিয়োগ স্থবির হয়ে গেছে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছিলাম আমার বিভাগে। ইন্টারভিউ শেষ করে আসার পর নির্দেশ এসেছে, সব স্থগিত করে ফেলতে হবে। কার্যত এর মানে, এই বছর যাঁরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরির কথা ভাবছিলেন, তাঁদের কপাল মন্দ। শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, মোটের ওপরে সব বিশ্ববিদ্যালয়ই শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে।
মার্কিন সরকার সাম্প্রতিক কালে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের যে প্রণোদনা বিল পাস করেছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বরাদ্দ আছে ১৪ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু টাকাটা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক যে ক্ষতি হয়েছে, তার তুলনায় নগণ্য। কাজেই আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপরে নিকট ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক চাপটা থাকছেই। একই দৃশ্য বিশ্বের দেশে দেশে হতে যাচ্ছে।
তবু মানুষ তো আশায় বাঁচে। কিছু আশা আমরা করতেই পারি। বিগত প্রতিটি অর্থনৈতিক মন্দার সময়েই বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষার ওপরে প্রভাব পড়েছে। এবারের মতো ভয়াবহ না হলেও কাছাকাছি। কাজেই আশা করা যায়, কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবে। প্রবাদ আছে, ‘প্রয়োজনীয়তাই উদ্ভাবনের জনক’। এই করোনাভাইরাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঝুঁকছে অনলাইন শিক্ষাসহ নানা সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে।
মানবজাতির দীর্ঘ ইতিহাস বলছে, আমরা নানা দুর্যোগ থেকে সব সময়ই বেঁচে ফিরেছি, ঘুরে দাঁড়িয়েছি নতুন উদ্যমে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এবারেও তা–ই হবে। সারা বিশ্বের সবকিছু এবং উচ্চশিক্ষার ওপরে যে প্রভাব পড়েছে, তা থেকে উত্তরণ ঘটবেই। সামনের কয়েকটা বছর খুবই কঠিন। তবে আমরা উঠে দাঁড়াবই। ইতিহাস তা–ই বলে।
অজস্র জীবনের মধ্যেই এই পথচলা : জোবাইদা নাসরীন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক
মাঝেমধ্যে শিক্ষার্থীরা ফোন করে কিংবা ফেসবুকে জানতে চায়, কবে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে? কিংবা কবে নাগাদ খুলতে পারে, সেই বিষয়ে কোনো তথ্য আমার কাছে আছে কি না? তার টিউশনিটি থাকবে কি না? আমি বুঝে যাই, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সঙ্গে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শুধু নয়, আরও অনেক কিছু জড়িত। তাদের কয়েকজনের জীবন নিয়ে ব্যক্তিগত সংগ্রামের কথা জানি। তারা অনেকেই টিউশনি করে, কেউবা খণ্ডকালীন চাকরি করত। শুধু নিজেদের খরচই নয়, এই ক্ষুদ্র টিউশনির টাকা থেকে কেউবা মা-বাবার ওষুধের খরচ দিত, কেউবা হয়তো দিত ছোট ভাইবোনের পড়ার খরচ। করোনাকালে তার ভয় শুধু করোনা আক্রমণের নয়, আরও বিস্তৃত। এই করোনার থাবায় সে বেঁচে গেলেও কীভাবে লড়বে আবার বেঁচে থাকা জীবনে?
করোনা হয়তো এই পৃথিবী থেকে চলে যাবে একদিন। এর আঁচড় থেকে যাবে সভ্যতায়। বাংলাদেশ সরকার মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার কিছু পাঠদানও। তবে খুব সহজেই ধারণা করা যায় যে বাংলাদেশের যেখানে সব পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই; সেখানে সবার টেলিভিশন থাকবে এবং সবাই এই পাঠদানে অংশ নিতে পারবে, সেটিও আশা করা যায় না।
এখন তাহলে আমাদের উপায় কী হবে? আমরা নিশ্চিত যে সামনের দিনগুলোতে অর্থনৈতিক অবস্থা মোকাবিলা করতে গিয়ে আমাদের সব স্তরের অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়বে। সেসব বিষয় আমলে নিয়ে কীভাবে আমাদের করণীয় ঠিক হবে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকটি বিভাগ নিজ নিজ শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছে। সেই সঙ্গে শিক্ষকদের ক্রমাগত আলাপচারিতার ফল হিসেবে শিক্ষক সমিতিও একটি তহবিল তৈরি করেছে, যা থেকে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়েরও লক্ষ্য হওয়া উচিত এই ধরনের শিক্ষা তহবিল তৈরি করা। করোনা-পরবর্তী অবস্থায় শিক্ষার ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে নেওয়া হবে, সেটি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এখনই পরিকল্পনা করতে হবে।
প্রতিটি দেশে যেকোনো সংকটের সময়ই বুদ্ধিজীবীদের কাজ থাকে সংকট-পরবর্তী শিক্ষা খাত নিয়ে পরিকল্পনা ও রূপরেখা প্রণয়ন। কিন্তু আমাদের দেশে সেটিও গড়ে ওঠেনি। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রয়োজন দেশের শিক্ষাবিদদের নিয়ে করোনা-পরবর্তী শিক্ষা কর্মসূচি তৈরি করা, যাতে এই ক্ষত তাড়াতাড়ি সারানো যায়।
আর শিক্ষার্থীদের বলব, করোনার ভয় তো আছেই, তবু সময়টিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সে জন্য বাড়তি পরিকল্পনা করো। নিজের নিরাপত্তা অটুট রেখে কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর সময়ও এটি। নিজেকে শাণিত করা এবং নিজের মানবিক গুণাবলির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের সময়ও হয়তো এখন। মনে রাখবে, অজস্র জীবন নিয়ে এবং অজস্র জীবনের পাশাপাশিই তুমি হাঁটছ...।
Upcoming Event
Academic Class Level
Institute Facilities
-------------------------
Special Attention for Every Students
A dynamic learning community recognized as one of the leading schools in Bangladesh, offering a good educational environment, safety and security of the students.
Study Tour